ঢাকা, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ৫:০২ অপরাহ্ন

শেরপুরে শিক্ষার্থীদের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও

sherpurনির্ধারিত স্থানে একাডেমী ভবন নির্মাণের দাবিতে শেরপুর জেলা প্রশাসকের বাংলোয় তালা ঝুলিয়ে দিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে রাখে শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। পরে শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের অফিস কক্ষের ভিতর ঢুকে তাদের এক দফা দাবি মেনে নেওয়ার দাবিতে অবস্থান নেয়। ঘণ্টাখানেক অবস্থান নেওয়ার পর শেরপুর পুলিশ সুপার এবং কলেজের ভাইস প্রিন্সিপালসহ অন্যান্য শিক্ষক এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। পরে জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা বাংলোর তালা খুলে দিয়ে কলেজে ফিরে যায়।

শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য সম্প্রতি কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতরে একটি জায়গার মাটি পরীক্ষার কাজ শেষ করা হয়। পরবর্তীতে শিক্ষাপ্রকৌশল বিভাগ ওই ভবন নির্মাণের জন্য কার্যক্রম শুরু করলে তৎকালীন জেলা প্রশাসক এতে বাধা দেয়। এর কারণ হিসেবে জানা যায়, জায়গাটি শত্রু সম্পত্তি বিধায় সেখানে স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েক দফা বৈঠক হলেও ভবন তৈরি করা যায়নি।

এর প্রেক্ষিতে সোমবার (৭ অক্টোবর) এক দফা দাবি জানিয়ে বর্তমান জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমানের কাছে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে স্মারকলিপি দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার পরও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত না হওয়ায় আজ মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে শিক্ষার্থীরা কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের‌ করে জেলা প্রশাসকের বাংলোর প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এরপর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় গিয়ে তারা অফিস কক্ষে প্রবেশ করে। সেখানে তারা তাৎক্ষণিক দাবি মেনে নেয়ার জন্য জন্য বিক্ষোভ করতে থাকে।

জেলা প্রশাসকের কক্ষে এ পরিস্থিতিতে এক পর্যায়ে শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলামসহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা এসে শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করে। এতে তারা না মেনে জেলা প্রশাসকের অফিস কক্ষে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকে। এর ঘণ্টাখানেক পর কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল আ জ ম রেজাউল করিম খানসহ অন্যান্য শিক্ষকরা এসে বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসেন। এক পর্যায়ে জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান ওই ভবন নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জয়িতা অধিকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করে নির্ধারিত স্থানে ভবনের কাজ শুরু করার আহ্বান জানান। সেইসঙ্গে তিনি নির্ধারিত স্থানে এ ভবন নির্মাণে জেলা প্রশাসকের আপত্তি নেই বলে জানিয়ে কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন। পরে জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের বাংলোর তালা খুলে দিয়ে কলেজে ফিরে যায়।

কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল আ জ ম রেজাউল করিম খান বলেন, ‘জেলা প্রশাসক শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে ভবনের জন্য অনুমতি দিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা দ্রুত ক্লাসে ফিরে যাবে, এটাই আমরা আশা করছি।’

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে আমার দ্বিমত নেই। শিক্ষাপ্রকৌশল অধিদপ্তরকে ভবন নির্মাণের জন্য ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। বৃষ্টি না থাকলে আগামীকাল ভিত্তিপ্রস্তর নির্মাণ করা হবে। যে জায়গায় সয়েল টেস্ট হয়েছে, সেই জায়গায় ভবন হবে।’

নিউজটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন