ঢাকা, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০১ অপরাহ্ন

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নামে বিক্রি হচ্ছে অন্য জেলার আম

chapai-mangoচাঁপাইনবাবগঞ্জের কয়েকটি বাজারে অন্য জেলার আম বিক্রি হচ্ছে ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম’ নামে। অসাধু ব্যবসায়ীরা এসব আম বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ। এতে প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতা, একই সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বাজারে আসতে আরও তিন চারদিন সময় লাগবে।

সোমবার (৩ জুন) সরেজমিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের পুরাতন বাজার, নিউ মার্কেট, রহনপুর ও শিবগঞ্জ বাজারে বিভিন্ন জাতের আম বিক্রি হতে দেখা গেছে। এসব আম চাঁপাইনবাবগঞ্জের বলে বিক্রি করা হচ্ছে। এখানকার আম সুমিষ্ট বলে ভোক্তারাও কিনছেন।

ব্যবসায়ীরা জানান, এখন বাজারে যেসব আম পাওয়া যাচ্ছে তার বেশিরভাগই আসছে রাজশাহী ও নওগাঁ জেলা থেকে। সাতক্ষীরা থেকেও কিছু পরিমাণ আম আসছে। এই সিন্ডিকেটে জড়িত কিছু অসাধু ব্যবসায়ী।

কর্মসূত্রে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের চরজোতপ্রতাপ এলাকায় থাকেন কুমিল্লার বাসিন্দা আলমগীর। বাজার থেকে আম কিনে জানান, চারদিন আগে পুরাতন বাজার থেকে আম কেনেন তিনি। কিন্তু আম মিষ্টি ছিল না বরং টক টক ভাব ছিল। চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের মতো স্বাদও নেই। কিন্তু দুইদিনই তার কাছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বলে বিক্রি করেছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যাংকের কর্মকর্তা আসাদুল ইসলামের কাছে গোপালভোগ বলে তার কাছে প্রচলিত গুটি জাতের আম বিক্রি করেছেন ব্যবসায়ীরা। তিনি বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের সুনাম রয়েছেন। আর বিক্রেতা বারবার সেগুলোকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বলছিলেন। তাই সরল বিশ্বাসে আম কিনে ঠকেছি। আমার স্ত্রী-সন্তানদের মনেও চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম নিয়ে একটা নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে।

আম ব্যবসায়ীরা জানান, প্রায় এক সপ্তাহ থেকে জেলার পুরাতন বাজারে আম বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ওঠা সব আমই বাইরে থেকে আসা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক আম ব্যবসায়ী জানান, বর্তমানে নওগাঁর সাপাহার ও পোরশা থেকে আম আসছে বেশি। বিকালে আম নামিয়ে সেগুলো ব্যাটারিচালিত ভ্যানে পাঠিয়ে দেওয়া হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাজারে। আবার কখনো কখনো খুব ভোরে আম নামিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বিক্রির জন্য। পোরশা ও সাপাহারের চেয়ে দাম বেশি পাওয়ায় বাগান মালিকরা চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম বিক্রি করতে পাঠান।

ওই ব্যবসায়ী বলেন, কেউ কেউ সত্য বলেই অর্থাৎ পোরশা-সাপাহারের আম বলেই বিক্রি করছে। আবার কেউ ওই আমই চাঁপাইনবাবগঞ্জের বলে বিক্রি করছে। বাজারে তদারকির ব্যবস্থা না থাকায় নির্বিঘ্নে প্রতারণা করে যাচ্ছে কিছু ব্যবসায়ী।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বাজারে আসতে আরো ৩-৪ দিন সময় লাগবে। গতকালই একজন কয়েকটি গোপালভোগ আম দিয়েছিলেন। সেগুলো খাওয়ার পর মনে হয়েছে পুরোপুরি পাকতে আরো কয়েকদিন সময় লাগবে।

তিনি বলেন, গায়ে তো আর লেখা নেই যে এটা চাঁপাইনবাবগঞ্জের। তাই বাইরের আমও এ জেলায় বিক্রি হতে পারে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে গোপালভোগ ও গুটি জাতের আমের পরিমাণ কম হওয়ায় ক্ষিরসাপাতি আমের সময় বাজার জমে উঠবে বলেও জানান তিনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মোকাব্বের আলম নাঈম বলেন, এখনো বাজার মনিটরিং করতে পারছিনা ঠিকঠাক। তবে অন্য জেলার আম চাঁপাইনবাবগঞ্জের নামে বিক্রি করা প্রতারণার শামিল। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন