ঢাকা, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০০ পূর্বাহ্ন

কুমিল্লায় ভূমিহীনের আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমি দখলের অভিযোগ

cumillaকুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমি জোর করে দখল করার অভিযোগ উঠেছে বাসির মিয়া নামে এক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ফলে ৫ শতক জমি বরাদ্দ পাওয়া ভূমিহীন আলী আহাম্মদ পরিবারসহ সেখানে উঠতে পারছেন না।

অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণের বিশেষ প্রকল্পের আওতায় জেলা প্রশাসনের করা ভূমিহীনের তালিকায় ২০১৮ সালে নাম উঠে হতদরিদ্র আলী আহাম্মদের। সরকারের করা তালিকায় নাম দেখে বড় আশায় বুক বাঁধেন তিনি। সেই আশা আরও পাকাপোক্ত হয় যখন ২০২০ সালে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ শতক জায়গার কবুলিয়াত দলিল, নামজারিসহ খতিয়ান আলী আহাম্মদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ৫ শতক জমি আর কপালে জোটেনি আলী আহাম্মদের। স্থানীয় এক প্রভাবশালী গিলে খেয়েছেন আলী আহাম্মদকে দেওয়া সরকারের সেই ভিটে। দখল হওয়া সেই ভূমি ফিরে পাওয়ার জন্য বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।

ভুক্তভোগী ভূমিহীন আলী আহাম্মদ মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা গ্রামের মৃত আবদুর রাজ্জাকের ছেলে। ভূমিহীন আলী আহাম্মদ বলেন, জেলা প্রশাসক, উপজেলা প্রশাসন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাইনি। আমাকে পাঁচ শতক জায়গা ২০২০ সালে কবুলিয়াত দলিল মূলে ৯৯ বছরের জন্য স্থায়ী বন্দোবস্ত দেওয়া হয়। যার দলিল আমি ২০২০ সালে পাই। কিন্তু ওই জায়গা আমি দখল বুঝে পাইনি। বন্দোবস্ত পাওয়ার পর থেকে আমার এই জায়গায় প্রভাবশালী এক যুবলীগ নেতার আত্মীয় বাঙ্গরা গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে বাসির মিয়া জোরপূর্বক দখল করেন। রাতারাতি ভেকু দিয়ে আমার জায়গার মাটি কেটে পুকুর বানিয়ে আমার জায়গায় মাছ চাষ শুরু করেন। আমি গরীব মানুষ, তাদের সাথে মোকাবেলা করার মতো টাকা আর ক্ষমতা কোনোটাই নাই। অনেকবার ভূমি অফিসে গিয়েও আশ্বাস ছাড়া আর কিছু পাইনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত বাসির মিয়ার কাছে ভূমিহীনের জায়গা দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আলী আহাম্মদকে যেখানে জায়গা দেওয়া হয়েছে এর আশেপাশে সবগুলো আমাদের সম্পত্তি। খাস জায়গাটায় আমাদের দাবি সবচেয়ে বেশি। এই জায়গা আমরা পাই। এই বন্দোবস্তের বিরুদ্ধে মামলা করে আমরা এটা বাতিল করেছি। বন্দোবস্ত বাতিলের কাগজ দেখতে চাওয়ায় তিনি গড়িমসি করেও কাগজ দেখাতে পারেননি।

এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরিন সুলতানা নিপা বলেন, অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখছি, আলী আহাম্মদের কাগজপত্র সঠিক রয়েছে। ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তাকে সরেজমিনে দেখার জন্য বলা হয়েছে। দখল না পাওয়ার কারণ কি আর বর্তমানে কে দখলে আছে, কিভাবে দখলে আছে, সেটা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সিফাত উদ্দিন বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন