১৬ বছরের দাম্পত্য জীবন সাজিয়া আফরিন লিজা ও সুমন মিয়ার। দীর্ঘদিন ধরে এ দম্পতির কোনো সন্তান হয়নি। অতঃপর দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর পরিবারে এসেছে নতুন অতিথি। কিন্তু সেই আনন্দ ছুঁতে পারছে না পরিবারের সদস্যদের। সন্তানদের মুখ দেখার আগেই পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে সুমন মিয়াকে। সম্প্রতি প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সকাল ৯টা ২০ মিনিটে রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নিহত সুমনের স্ত্রী লিজা যমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।
সুমনের বাবা নাসির উদ্দিন বলেন, আল্লাহ দুটি ফুটফুটে কন্যাসন্তান দিয়েছেন। তাদের মুখ দেখে আমার সব কষ্ট দূর হয়ে গেছে। সবকিছু ভুলে গিয়ে তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে আমি এখন খুশি। তারা দেখতে বাবার মতোই হয়েছে। বর্তমানে মা ও মেয়ে তিনজনই সুস্থ আছে। আমরা সবাই এখন হাসপাতালেই আছি। আপনারা সবাই তাদের জন্য দোয়া করবেন।
নিহত সুমন মিয়া নরসিংদী রায়পুরা উপজেলার চরসুবুদ্দি ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনের ছেলে। তিনি তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তালা প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন। এদিকে গত ২৩ মে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন নিহত হওয়ার ঘটনায় রায়পুরা উপজেলা পরিষদের সব পদে নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। স্থগিত রায়পুরা উপজেলার পরবর্তী নির্বাচনের তারিখ এখনো ঘোষণা হয়নি।
নিহত সুমন একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি পোলট্রি ফিড, অ্যাগ্রো ফার্ম, মাছের খামারের ব্যবসা করতেন। স্ত্রী লিজা আক্তারকে নিয়ে থাকতেন নরসিংদী শহরের সাটিরপাড়া এলাকায়।
নরসিংদীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় এরইমধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদেরও দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২২ মে উপজেলার মীরেরকান্দি এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণাকালে প্রতিপক্ষের হামলায় সুমন মিয়া নিহত হয়। এ ঘটনায় অপর ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আবিদ হাসান ওরফে রুবেল মিয়াকে প্রধান আসামি করে ২৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪০-৪৫ জনকে আসামি করে নিহতের পিতা বাদী হয়ে রায়পুরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।