ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া এবং ফুলপুর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। পানি কমায় বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন দুর্গতরা। দৃশ্যমান হচ্ছে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন। আকষ্মিক বন্যায় পানিতে তলিয়ে সতেজ ফসলের পচন কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন চাষিরা। বিশেষ করে বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমন ফসলের। কৃষকরা বলছেন, সরকারি সহযোগিতা না পেলে তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া ও ফুলপুর উপজেলায় ১৯ হাজার হেক্টর আমন ধান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া, ১৫ হাজার হেক্টর আমন ধান আংশিক নষ্ট হয়েছে। চার হাজার হেক্টর সবজির মাঠ নষ্ট হয়েছে।
এদিকে, মৎস্য খাতেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী ১৪ হাজার পুকুরের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। মাছের ক্ষতি ৮৫ কোটি টাকা।
হালুয়াঘাট উপজেলার দর্শা গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, ‘বন্যা শুরুর পর ৫-৭ দিন একটানা পানির নিচে ধান খেত তলিয়ে যাওয়ায় সব ফসল পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। আমার সব স্বপ্ন এখন পানিতে ভাসছে। জানি না আগামী দিনগুলো কিভাবে পার করবো।’
ফুলপুর উপজেলার সিংহাসন গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ধানের জমি ও সবজির খেত সবই নষ্ট হয়ে গেছে। কী খাইয়া বাঁচবো জানি না। সরকার আমাদের দিকে নজর না দিলে আর কোনো উপায় থাকবে না।’
ফুলপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কামরুল হাসান কামু বলেন, ‘কৃষকদের পুনর্বাসনের জন্য বাজারে জমায়েত করে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। নষ্ট হয়ে যাওয়া জমিতে শরিষা ও ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসল চাষে আগ্রহী করে তোলা হচ্ছে তাদের। এসব ফসলের বীজ বিনা মূল্যে সরবরাহ করা হবে।’
প্রসঙ্গত, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে গত ৪ অক্টোবর প্লাবিত হয় ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া এবং ফুলপুর উপজেলা। দুর্ভোগে পড়েন দুই লাখ মানুষ। এছাড়াও রাস্তাঘাট অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলার হালুয়াঘাট থেকে পানি সম্পূর্ণ নেমে গেলেও ফুলপুর এবং ধোবাউড়ায় এখনো পানিবন্দি রয়েছেন ৩০ হাজার মানুষ।